ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আমনের চারা সংকট দুশ্চিন্তায় কৃষক 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 1 September 2024, 19 বার পড়া হয়েছে,
মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার রোপা আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু, কোথাও চারা সংকট এবং কোথাও চারার দাম বেশি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক সালাম মিয়া বলেন, ‘৫ কানী জমির আমন খেত ৬ দিন পর্যন্ত পানিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রায় ৯০ শতাংশ আমনের চারা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
‘নতুন করে আমনের চারা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। কিন্তু, এখনো কোথাও তা পাইনি,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমনের চারা পাই তাহলে আবার ধান ফলাতে পারবো। চারা না পেলে এ বছর জমি পতিত রাখতে হবে।
একই গ্রামে কৃষক জামাল মিয়া বলেন, তিন বিঘা জমি চাষাবাদ করে যে ফসল পান, তা দিয়ে ৫ সদস্যের সংসার চলে। কিন্তু এবারের বন্যায় পুরো জমির রোপা আমনই নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নামার পর পুনরায় জমি তৈরি করেছেন। কিন্তু কোথাও আমনের চারা পাচ্ছেন না।
উপজেলায় বায়েক ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর মিয়া জানান, রোপা আমন খেত নষ্ট হলেও বন্যায় সেই জমিতে পলি জমেছে। ফলে এখন ফসল আরও ভালো হবে। সেই আশায় ধারদেনা করে জমি প্রস্তুত করেছেন তিনি। কিন্তু আমনের চারা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলায়  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, এবারের বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায়  চার হাজার ২০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসাবে, ক্ষতিগ্রস্ত চারহাজার ২০ হেক্টর জমিতে পুনরায় আমনের চাষ করতে ১৫০ হেক্টর জমির বীজতলা প্রয়োজন। কিন্তু বন্যায় বীজতলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো উপজেলাতে আমনের চারার চরম অভাব দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম মুঠোফোনে বলেন, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন মৌসুমে ধানের চারা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আশা করি এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও রিকভারি করা যাবে। তাছাড়াও কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আমাদের চলতি আমন মৌসুমে ১২ হাজার ৫০  হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমন ধানের চারা সংকটের কারণে চারার চাহিদা যোগান দেয়ার জন্য কৃষকরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে আসছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারিভাবে প্রণোদনা ও দেওয়া হয়েছে আশা করি তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে এ পর্যন্ত  ৬০০০ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ৩০ হেক্টর বীজতলা রয়েছে।