নিউজ ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে তিনটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ কারণে এসব কেন্দ্রের ফল বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তিন কেন্দ্রের ফল বাদেই এ দুই আসনের উপনির্বাচনের গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। আসন দুটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম গেজেট প্রকাশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
ইসি সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ উপনির্বাচনে ৫ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পান আওয়ামী লীগের মো. শাহজাহান আলম। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। যে দুটি কেন্দ্রে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে সেগুলোতে ভোটার ছিল সাত হাজার ৫৫৫ জন। ওই দুই কেন্দ্রের মোট ভোটারের চেয়ে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বেশি। একইভাবে লক্ষ্মীপুর-৩ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পেয়েছেন এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ রাকিব হোসেন পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৬ ভোট। এ আসনের যে কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে সেটিতে মোট ভোটার রয়েছেন চার হাজার ৩২০ জন। স্থগিত হওয়া কেন্দ্রের ভোটারের চেয়ে প্রধান প্রার্থীর ভোট সংখ্যার পার্থক্য বেশি হওয়ায় নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে সোমবার বিকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের যে উপনির্বাচন হয়েছিল, এতে কিছু অনিয়ম সংক্রান্ত তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই তথ্যের আলোকে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের মাধ্যমে পৃথক তদন্ত করিয়েছে। সেই তদন্তের আলোকে কমিশন ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের দক্ষিণ খাগুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রে জালভোটের কিছু ছবি গণমাধ্যমে এসেছিল। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অনিয়ম পাওয়া গেছে। সেখানে দুজনকে জালভোট প্রদানকারী হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওখানে দুই বুথের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও ওই কেন্দ্রের ফল বাতিল করা হয়েছে। এখন রিটার্নিং অফিসার ওই কেন্দ্রের প্রাপ্তভোট বাদ দিয়ে নতুন করে ফল বিবরণী পাঠালে কমিশন গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
ইসি সচিব আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে দুটো কেন্দ্রে অনিয়ম পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এগুলো হলো- ৯৫নং যাত্রাপুর নুরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও ১২৭নং শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুটি কেন্দ্রের ফল বাতিল হয়েছে। সংশোধিত ফল বিবরণী পাওয়ার পর গেজেট প্রকাশ করবে ইসি।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, অভিযোগ পাওয়ায় তিনটি কেন্দ্রে অনিয়মের তদন্ত করেছে ইসি। বাকি কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে অভিযোগ আসেনি। তাই সেখানে তদন্ত করা হয়নি।