ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে কসবার সাবেক ওসি মিজানুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জাতীয়, 21 September 2023, 100 বার পড়া হয়েছে,
নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামে বিনোদন কেন্দ্র ফয়স লেক থেকে তুলে নিয়ে কলেজ ছাত্রীকে হোটেল কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ব্রাক্ষণবাড়িয়োর সাবেক ওসি (বরখাস্ত) মিজানুর রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আরিফুল আলম  বলেন, এক কলেজছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাশাপাশি ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন।

একই মামলায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে এবং ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) অনুসারে আসামির হাজতবাস সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে বলে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন।

রায়ের সময় আসামি মিজানুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১২ জুলাই নগরীর ফয়’স লেক এলাকা থেকে ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে নিয়ে ফয়’স লেকে ঘুরতে যায়।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গাড়িতে তুলে নগরীর চকবাজারে একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে ছেলে মেয়ে দুজনকে আলাদা কক্ষে আটকে রেখে মেয়েটিকে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি বাথরুমের কাঁচ ভেঙে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে হোটেলের লোকজন তাকে উদ্ধার করে।  এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ জুলাই মেয়েটির বাবা হুমায়ন কবির বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ওসি মিজানসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বাকি দুই আসামি হোটেলের কর্মচারী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, হুমায়ন কবিরের দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে একটি ছিল নারী নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (৪)-খ ধারায়। আরেকটি মামলা ছিল, জোরপূর্বক মেয়েটিকে তুলে নিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২০, ১৭০ ও ৩৮৬ ধারায় দায়ের করা।

প্রথম মামলায় ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে ওসি মিজানসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিন মাস পলাতক থাকা ওসি মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। হাইকোর্টের আদেশে ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ওসি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।