
কসবা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়ম-দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক যুগান্তরের জেলা স্টাফ রিপোর্টার মোঃ ফজলে রাব্বি ও আরটিভির আখাউড়া প্রতিনিধি মোঃ সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। কসবার সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের আয়োজনে সোমবার দুপুর ১২টায় শহরের পৌর মুক্তমঞ্চের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কসবা প্রেসক্লাব, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ অংশ নেন। এছাড়াও মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার ও আখাউড়া থানার ওসি মোঃ ছমিউদ্দিনের প্রত্যাহার এবং দৈনিক যুগান্তর ও আরটিভিতে প্রকাশিত ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়ম-দূর্নীতির সংবাদের সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার তিন দফা দাবী জানানো হয়।
কসবা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের স্বপনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন লিটন, যুগান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি মো. সোহরাব হোসেন, আখাউড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তাজবীর আহমেদ, আখাউড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. রুবেল আহমেদ, কসবা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. রুবেল আহমেদ, মাই টিভির কসবা প্রতিনিধি মো. আলমগীর হোসেন, এনটিভির কসবা-আখাউড়া প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম, কসবা প্রেসক্লাবের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো: শাখাওয়াত হোসেন, অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠনের সভাপতি (সিটিএল) মো. এলমান ভুইয়া, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক নেতা শহিদুল খা এবং রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন কসবা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন পলা।
বক্তারা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক মামলার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সাংবাদিকগণ সমাজের দর্পন। সমাজে অন্যায়-অনিয়ম, সফলতা, সম্ভাবনা, জনদুর্ভোগ বিষয়ক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রেরণ করে তারা দেশের কল্যাণ বয়ে আনেন। আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়ম সংক্রান্ত সংবাদে ইমিগ্রেশন ওসির যদি কোন আপত্তি থাকে তাহলে তিনি সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রতিবাদ পাঠাতে পারতেন বা প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দিতে পারতেন। তা না করে সাংবাদিকের নামে মামলা দেওয়া এবং তদন্ত ছাড়াই দ্রুত মামলা নথিভূক্ত (এফআইআর) করা অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। এটি সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার অপপ্রয়াস।
বক্তারা আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বাঁধা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের পরও যদি ফ্যাসিবাদি কায়দায় সাংবাদিকদের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা অব্যাহত থাকে তাহলে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পার পেয়ে যাবে। তখন তারা নির্দ্বিধায় দূর্নীতি অনিয়ম করবে। এতে সাধারণ মানুষ পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হবেন। বক্তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।
উল্লেখ্য যে, ৭ আগস্ট দৈনিক যুগান্তর ও আরটিভির অনলাইনে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ইনচার্জসহ কয়েকজন পুলিশের অনিয়ম-দূর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে গত ১২ আগস্ট সাংবাদিক ফজলে রাব্বি ও সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় চাঁদাদাবী ও মানহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন।