আশুগঞ্জে দুই শিশু হত্যা: দায় স্বীকার করে আদালতে সফিউল্লাহ’র জবানবন্দি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 March 2022, 330 বার পড়া হয়েছে,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই শিশুকে বিষমাখানো মিষ্টি খাইয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত আসামি সফিউল্লাহ ওরফে সোফাই সর্দার (৪৮)। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (দ্বিতীয় আদলত) আফরিন আহমেদ হ্যাপীর আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। সফিউল্লাহ আশুগঞ্জ উপজেলার মৈশার গ্রামের শামছু মিয়ার ছেলে।

এর আগে গতকাল সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টায় ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি বাস কাউন্টারের সামনে থেকে সফিউল্লাহকে গ্রেপ্তার করে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল। পরে রাতে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, সফিউল্লাহ তার জবানবন্দিতে আদালতকে জানায়- সে এবং ওই দুই শিশুর মা রিমা বেগমের মধ্যে পরকীয়ে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই শিশুকে হত্যা করলেই তাদের দুইজনের বিয়ে করতে সুবিধা হবে। সেজন্য তারা দুইজন মিলে ও দুই শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিমাকে তেলাপোকা মারার বিষ মেশানো মিষ্টি এনে দেন সফিউল্লাহ।

মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও বলেন, দুই শিশুর মা রিমা বেগম হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সফিউল্লাহ জবানবন্দিও ঠিক একই। তারা নিজেরা বিয়ে করার জন্যই দুই শিশুকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করে এবং ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয় বলে প্রচার করে।

উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ওরফে সুজন খানের দুই শিশু সন্তান ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খানের (৫) রহস্যজনক মৃত্যু হয়। প্রথমে পরিবারের অভিযোগ ছিল, জ্বরাক্রান্ত ওই দুই শিশুকে নাপা সিরাপ খাওয়ানোর পর তাদের মৃত্যু হয়। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে দুই শিশুর মা রিমা বেগমই পরকীয়ার জেরে পরকীয়া প্রেমিক ও চালকলের শ্রমিক সর্দার সফিউল্লাহ’র দেওয়া বিষমাখা মিষ্টি খাইয়ে তাদের হত্যা করে। রিমা ও সফিউল্লাহ স্থানীয় খড়িয়ালা এলাকার একটি চালকলে কাজ করতেন। এ ঘটনায় রিমা ও সফিউল্লাহর বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃত দুই শিশুর বাবা ইসমাইল হোসেন। পরে ১৬ মার্চ রাতে রিমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।