সৌদিআরবে নিজ কক্ষ থেকে গাজী জাকির হোসেন (৩০) নামের এক প্রবাসীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সৌদি আরবের সময় সকাল ১০টার দিকে রিয়াদের হাইলোজারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের হাজী কাঞ্চন গাজীর ছেলে। এই ঘটনায় জাকির হোসেনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অরুয়াইলের ধামাউড়া গ্রামের হাজী কাঞ্চন গাজীর ৫ ছেলের মধ্যে জাকির হোসেন ছিলেন ৪র্থ। গত ১২বছর আগে সে সৌদি আরবে পাড়ি জমায়। সেখান পাইপ ফিটিং ও কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে ঠিকাদার হিসেবে জনবল সাপ্লাই দিতেন। গত কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়েছে তার কোম্পানির জন্য। জাকিরের রুমে জাকিরসহ ৪ জন বাংলাদেশী থাকতেন। এছাড়াও একই বিল্ডিংয়ে তার অধিনে থাকা শ্রমিকরা থাকতেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার ভোর ৫ টায় অন্যান্য শ্রমিকদের ঘুম থেকে উঠিয়ে ডিউটিতে পাঠায় জাকির। তারপর জাকির তার কক্ষে ছিল। বন্ধু রাসেলকে নিয়ে সকাল ১১টায় কোম্পানির এক মালিকের সাথে দেখা করার কথা ছিল। জাকিরের কথামতো রাসেল সকাল ৯ টায় জাকিরকে বহুবার ফোন দেয়, ফোন ধরেনি। রাসেল জাকিরের খবর নিতে বাসায় যায়। অনেক ডাকাডাকি করলেও জাকির দরজা খোলেনি। পরে দুই-তিন জন বাংলাদেশী প্রবাসীর সহযোগিতায় দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দেখে জাকিরে গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে রয়েছে। পেটের নাড়িভুড়ি বের হয়ে আছে। তখন তারা চিৎকার করতে থাকলে আশেপাশের বাংলাদেশীরা জড়ো হয়। পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। এই ঘটনায় আশেপাশের রুমের কয়কজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।
জাকিরের বড় ভাই দুলাল গাজী জানায়, ‘আমরা ৫ভাইয়ের মধ্যে ৪ ভাই সৌদি আরব ও কাতারে প্রবাসে ছিলাম। আমি বর্তমানে দেশে আছি। জাকিরের সাথে সৌদিতে আরও এক ভাই আছে। জাকির সৌদিতে বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক দিয়ে ভালো রোজগার করতো। তার অধিনে অন্তত ৫হাজার শ্রমিক কাজ করতো। সর্বশেষ গত ৩বছর আগে সে দেশে এসেছিল। সম্প্রতি সে দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল। আমরা তার বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এজন্য কন্যা পছন্দ করে রেখেছিলাম। দুই/এক দিনের মধ্যে বিয়ে তারিখ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা ভাইকে জীবিত অবস্থায় আর দেখতে পারব না’।
তিনি অভিযোগ করে বলেন,’ জাকিরের রোজগারে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার লোকজন পরিকল্পিতভাবে জাকিরকে খুন করেছে। ইদানীং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন ছেলে জাকিরকে হুমকি দমকি দিচ্ছিল। তাদেরকে সৌদি পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। আমি আমার ভাইয়ের খুনিদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তি কামনা করছি’।