নিজস্ব প্রতিবেদক : ১১ জানুয়ারি-২০২৫ তারিখ শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য কথাসাহিত্যিক আমির হোসেনকে বিশ^ সাহিত্য কেন্দ্রের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক আবু সালেহ এবং প্রখ্যাত কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রেজাউদ্দিন স্টালিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ও শিশুসাহিত্যিক ফারুক হোসেন এবং বরেণ্য শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনওয়ারুল কবীর বুলু। কবি ও শিশু সাহিত্যিক সুজন বড়–য়ার সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কবি ও শিশুসাহিত্যিক আতিক রহমান।
কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন ১৯৭৩ সালের ৫ জানুয়ারি কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. সুরুজ মিয়া ও মাতার নাম গুলবরের নেছা ১৯৯৬ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে অনার্সসহ এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৩ সালে বিএড ও ২০১৫ সালে এল এল বি ডিগ্রী অর্জন করেন।
তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলিগ্রন্থগুলি-নিমন্ত্রিত তমসা (কবিতা)-২০০৬, দার্শনিক কবি মাশরেকী’র জীবন ও সাধনা (গবেষণা)-২০০৭, ঝরাফুলের সুরভি (উপন্যাস)-২০০৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ইতিহাস (গবেষণা)-২০১২, জলময়ূরীর পেখম ২০১৩, (গল্প), জলের গহীনে নীল জোছনা (কবিতা)-২০১৩, মালালার আর্তনাদ (উপন্যাস)-২০১৩, তোমার হরিণমায়া চোখ (গল্প)-২০১৫, চালাক কুমির ও বোকা শেয়াল (শিশুতোষ গল্প)-২০১৬, সিঁদুরের দেয়াল (উপন্যাস)-২০১৬, রমেশ ঋষির সংসার (গল্প)-২০১৬, ক্লান্তিহীন এক অভিযাত্রী মোকতাদির চৌধুরী (গবেষণা)-২০১৮, ছোটদের বঙ্গবন্ধু (গবেষণা)-২০১৯, সুখ নগরের সারথি (কবিতা)-২০১৯, বাঁশির সুরে পরীর নাচ (শিশুতোষ গল্প)-২০১৯, তিতাস পাড়ের গল্প (গবেষণা)-২০১৯, পরিমল স্যারের পুরিন্দা (গল্প)-২০১৯, মায়াবী মদিরাক্ষি (কবিতা)-২০১৯, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার (গবেষণা)-২০২০, মুক্তিযুদ্ধের গল্প (গল্পগ্রন্থ)-২০২০, অদ্বৈত’র তিতাস ও অন্যান্য প্রবন্ধ (গবেষণা)-২০২১, বৃহন্নলা (উপন্যাস)-২০২১, তিতাস বন্দনা (সম্পাদনা)-২০২২, শেখ রাসেল শৈশবে ঝরা যাওয়া ফুল(গবেষণা)-২০২৩, হিরালী ও অন্যান্য গল্প (গল্পগ্রন্থ)-২০২৪ এবং মহাদেবের মৃত্যুরহস্য(গল্পগ্রন্থ)-২০২৪। কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন সাহিত্যের ছোট কাগজ ‘স্বদেশ’ সম্পাদনা করছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ‘চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগার’ নামে একটি সুপরিচিত গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছড়াও তিনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও স্থানীয় শিল্প-সাহিত্য বিষয়ক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
তিনি সাহিত্যের বেশ কয়েকটি পত্রিকা ও সংকলনের প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান সম্পাদক ও উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যেই তিনি সাহিত্যের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বক্তা ও আলোচক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে উঠছেন। দেশ-বিদেশ ভ্রমণ যেন শুধুই তাঁর সখ নয়, নেশায় পরিণত হয়েছে।
তিনি ২০০৮ সালে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার (স্বজন সমাবেশ) বর্ষসেরা লেখক সম্মাননা, ২০১৩ সালে তিতাস আবৃত্তি সংগঠন সম্মাননা পদক-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৪ সালে জননী সাহিত্য পদক-রাজশাহী, ২০১৪ সালে ইদ্রিস খান স্মৃতি সম্মাননা পদক-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৪ সালে কবি এম. আমজাদ আলী স্মৃতি পদক-রাজশাহী, ২০১৫ সালে ‘মেঠোপথ’ সাহিত্য পদক-কিশোরগঞ্জ, ২০১৮ সালে বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী পুরস্কার ২০১৯ সালে সুমিতা সাহিত্যপত্র সম্মাননা-আগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত, ২০২০ সালে কলকাতা-ঢাকা বঙ্গমৈত্রী পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত বঙ্গমৈত্রী পদক, ২০২১ সালে কবির কলম সম্মাননা পদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০২২ সালে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রীর ৫১ ্বছর পূর্তি উপলক্ষে কলকাতা ভারত হতে বঙ্গবন্ধু পদক, ২০২২ সালে মেঘনা সাহিত্য পুরস্কার আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০২২ সালে নজরুল আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক পদত্ত নজরুল পদক, ২০২২ সালে ভারত বাংলাদেশ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণ পদক ও ২০২৩ সালে জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্মৃতি পরিষদ, ঢাকা কর্তৃক প্রদত্ত জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড-২০২৩ লাভ করেন।
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ^াসী এ কবি, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি ঢাকা এর নিয়োগকৃত গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ২০২৩ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত পিএইচডি গবেষণা কোর্সে ভর্তি হয়ে কালজয়ী ঔপন্যাসিক অদ্বৈত মল্লবর্মণের সৃষ্টিকর্মের উপর গবেষণা কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।