বিজয়নগরে শতবর্ষী পুকুর রক্ষায় আন্দোলন থমকে গেল পুলিশের বাধায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 3 November 2025, 33 বার পড়া হয়েছে,

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী একটি পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশের বাধা ও ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের সাতবর্গ বাজার এলাকায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে সাতবর্গ এলাকার ওই পুকুরটি স্থানীয়দের গোসল, ওজু ও নিত্যপ্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা শুরু করলে এলাকাবাসী এর প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, মানববন্ধন চলাকালে পুকুর ভরাটের পক্ষে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এসময় বিজয়নগর থানার এসআই মামুন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পুলিশ ও জনতা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

এ সময় ধস্তাধস্তি, হট্টগোল ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পুকুর রক্ষায় দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ এসে ব্যানার কেড়ে নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে পুলিশ পুকুর ভরাটকারীদের পক্ষেই কাজ করছে।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, তারা ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে এসআই মামুন তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় জুরু মিয়া, হারুন মিয়া, হিরন মিয়া, এমরানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তারা বলেন, “শত বছরের পুরনো এই পুকুর শুধু ইতিহাস নয়, এটি আমাদের জীবনের অংশ। এটি ভরাট হলে আমরা পানির সংকটে পড়ব, পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হবে।”

স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, জলাধার সংরক্ষণ আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট করা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে অবৈধ ভরাট বন্ধ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, “এসআই মামুন ঘটনাস্থলে কিছুটা অপেশাদার আচরণ করেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।