নিজস্ব প্রতিবেদক : ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা অবশ্যই নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেন, ‘এটা অপ্রত্যাশিত। একজন অধ্যক্ষ এভাবে কথা বলতে পারে না। তার মুখ থেকে এ ধরনের ভাষা আশা করা যায় না। যেহেতু তার ফোনালাপের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তারা কী পদক্ষেপ নেন তা দেখে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন আদালত। এরপর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। ওই তদন্ত রিপোর্ট দেখে আগামী ১ সেপ্টেম্বর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।
অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে আদেশের নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই বিষয়ে আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শুনানিতে আদালত বলেন, ‘ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা সত্যি হলে অবশ্যই নিন্দনীয়। এটা অপ্রত্যাশিত। তার মুখ থেকে এ ধরনের ভাষা আশা করা যায় না।
সোমবার (৯ আগস্ট) হাইকোর্টে এ বিষয়ে করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। পরে আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
এর আগে রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল বলেন, ‘অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। কারণ তিনি অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়বে।
এর আগে রোববার (৮ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন ভিকারুননিসার দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল।
রিটে নৈতিক স্খলনের দায়ে অধ্যক্ষকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার আরজি জানানো হয়। একইসঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। দাবি করা হয়, ওই ফোনালাপ ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ও প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর। সেই কথোপকথনে এমন ভাষা ব্যবহৃত হয়, যা প্রকাশের অযোগ্য।