এখনো পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর কসবার আনন্দ ভুবন

জনতার কন্ঠ, 15 July 2022, 370 বার পড়া হয়েছে,

ঈদের ৬ষ্ঠ দিনেও পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত কসবা উপজেলার বল্লভপুর-শিমরাই ব্রিজের আশপাশ। বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান সমূহের তালিকায় এ সুন্দর জায়গাটির নাম আনন্দ ভুবন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিনি পর্যটন
কেড়েছে সবার মন
বল্লভপুর -শিমরাইলের মহামিলন
নাম তার আনন্দ ভুবন।

➤আনন্দ ভূবনের অবস্থান:
কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন এর পশ্চিম উত্তরে বল্লভপুর ও শিমরাইল নামক গ্রামের মধ্যবর্তী রাজার খালের উপর নির্মিত এক দীর্ঘ সেতুকে কেন্দ্র করেই এলাকার সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের ঢল। বর্ষাকালে দক্ষিণে কসবার কুটি বাজারের পশ্চিম পাশের হাওড়ের উদাস করা বাতাসের সুরভী আর ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে বল্লভপুর -শিমরাইলের সংযোগ স্থাপনকারী এই ব্রিজে/আনন্দ ভূবনে। আর কোন বাধা না থাকায় এই প্রাণজুড়ানো বাতাস ছোট ছোট ঢেউয়ের তালে তালে নবীনগরের পাশে মেঘনাতে গিয়ে মিশে যায়। বর্ষাকালে বিশেষত ঈদের উৎসব মুখর সময়টুুুকুতে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার দর্শনভিলাষী মানুষ এখানে এসে প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য ও আনন্দ উপভোগ করে।

নবীনগর,কসবা,আখাউড়া,মুরাদনগর,আশুগঞ্জ থেকেও এখানে শিক্ষা সফর ও পিকনিক পার্টি এসেছে।আনন্দ উপভোগ করছে প্রতিনিয়ত।
বর্ষাকালে এখানে পর্যটকদের জন্য মাঝির পালের নৌকা/বৈঠার নৌকা ছাড়াও স্বল্প মূল্যে হাই স্পীড বোটে বেড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।শিশুদের খেলনা সামগ্রী, হালকা খাবারের ভাসমান দোকান,প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের মাধ্যমে ছবি তোলার ব্যবস্থা, সাঁতারের জন্য শর্টস,সুইমিং কাষ্ট,সাঁতার কাটার জন্য লাইফ বয়া এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এখানে আপনি তার সবই পাবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খ্যাতিমান কবি এস এম শাহনূরের লেখা ভাইরাল কবিতা ’আনন্দ ভুবন’।

“ও ভাই!ব্যস্ততম জীবনে যদি এতটুকু সুখ চাও,
কসবা থানার পশ্চিম-উত্তরে আনন্দ ব্রিজে যাও।
ব্রীজতো নয় লোকের মেলা বর্ষাকাল জুড়ে
বড় ভাঙ্গার সেই বাশের সাঁকো মনে কিরে পড়ে?
এই খানেই জন্ম আমার মানুষ বড়ই ভালো,
নেইকো মনে হিংসা-বিভেদ,নেই সাদাকালো।
বড় ভাঙ্গার ব্রিজ দেখতে ‘রাজার খালের’ উপর
হাজার মানুষ আসছে ছুটে ছেড়ে আপন ঘর।

কৃষক-শহুরে আসে,আসে ছেলে মেয়ের দল;
দুচোঁখ ভরে দেখছে সবাই ঝিঁকিমিঁকি জল।
এ যৌবনা বর্ষায় রাস্তার দুধারে পানি করে থৈথৈ
এমন সুন্দর বিকেল ফেলে কেমনে ঘরে রই?

ব্রিজের পশ্চিমেতে শিমরাইল,পূর্বতীরে বল্লভপুর,
সকাল বিকাল দু’বেলাই লোকে ভরপুর।
প্রাণ জুড়ানো এই পরিবেশ হেসেই কাটে বেলা;
মন মাতানো রাজার ব্রীজে বসেছে রূপের মেলা।

প্রতিদিনই আসছে হেথা দশ গ্রামের লোকজন,
তাইতো কবি তার নাম দিয়েছি আনন্দ ভূবন।”

➤আনন্দ ভুবনে কিভাবে যাবেন?
প্রকৃতি প্রেমিক আর ভ্রমন পিপাপু মানুষজন বছরের যেকোনো ঋতুতেই আনন্দ ভুবনে যেতে পারেন। মূলতঃ বর্ষাকালীন সময়টুকুতে আনন্দ ভুবনের আনন্দ উপচে পড়ে।

★সড়ক পথঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী বাসস্ট্যান্ট থেকে প্রতিদিন ১০ মিনিট পরপর কাইতলা-বিটঘরের উদ্দেশ্যে সিএনজি যাওয়া আসা করে।পথিমধ্যে জনপ্রতি মাত্র ৮০ টাকা ভাড়া নিয়ে নেমে পড়ুন সূর্যদীঘল গ্রাম বল্লভপুর।আর শায়খুল বাঙালের জন্মভূমি রত্নগর্ভা গ্রাম বল্লভপুরের পশ্চিমেই আনন্দ ভুবন।

★কসবা থেকে সরাসরি সিএনজিতে চারগাছ হয়ে আসতে পারেন বল্লভপুর-আনন্দ ভুবন।

★কুমিল্লা থেকে আসা দর্শনার্থীগণ চৌমুহনী বাসস্টপেজ থেকে সরাসরি সিএনজি নিয়ে অথবা কুটি বাজার থেকে অটোরিকশা করে শিমরাই গ্রামের ভিতরের দৃশ্য দেখতে দেখতে ৩০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন আনন্দ ভুবনে।জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ৫০ টাকা।

★কুটি বাজার থেকে মেহারী হয়েও সহজে পৌঁছতে পারেন আনন্দ ভুবনে।জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ৪০ টাকা।

★নদীপথেঃ বর্ষাকালে বাঙ্গরা বাজার,সিদ্বিগঞ্জ কিংবা কালিগঞ্জ বাজার থেকে প্রতিনিয়ত নৌকা আসা যাওয়া করে। নবীনগর থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় আসতে পারেন আনন্দ ভুবনে।

আপনাদের ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হোক।