মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ‘থাপ্পড় দিয়ে পাবনা ছাড়া করার’ হুমকি এমপির

সারাদেশ, 8 March 2022, 182 বার পড়া হয়েছে,

নারী দিবসের দাওয়াত দিতে দেরি হওয়ায় পাবনা জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনা ছাড়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলির বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নারী দিবসের এক আলোচনা সভায় এমন অভিযোগ করেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান।

এ সময় তিনি ওই সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার কথোপকথনের একটি ফোনকল রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। উল্লেখিত অডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকার ওই অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সূত্রমতে, পাবনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে নারী দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরই জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান অভিযোগ করেন, সোমবার বেলা ১১টার দিকে পাবন সদর উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা প্রথমে তাকে ফোন করে নারী দিবসের অনুষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় পাশে থাকা সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি ওই ফোন নিয়ে কানিজ আইরিন জাহানকে ধমকাতে থাকেন।

মহিলা কর্মকর্তা বলেন, ফোনালাপে এমপি জলি নারী কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন- ‘এই আপনি কি হইছেন, আপনি নারী হয়ে নারীদের সম্মান করেন না! আপনাকে এক থাপ্পড় মেরে পাবনা ছাড়া করব কিন্তু। আপনার খুব বেশি স্পর্ধা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটা মেয়ের সঙ্গে আপনি খারাপ ব্যবহার করেন। ফাউল মহিলা কোথাকার। বেশি সাহস হয়ে গেছে আপনার নাহ! আপনি সরকারি কর্মকর্তা, আপনাকে এমপির বাসায় আসতে হবে, এসে দাওয়াত করতে হবে। আর কালকে যদি আমি প্রোগ্রামে দাওয়া না পাই তাহলে আপনাকে আমি কেমন করে পাবনা ছাড়া করি তার ব্যবস্থা আমি করব। আপনাকে (পাবনা) ছাড়া করতে ১০ মিনিটের ব্যাপার।’

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত নারী দিবসের ওই আলোচনা সভায় বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, নারী নেতা এবং মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বকাঝকা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আমি ওই নারী কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম, কিন্তু আমার ফোন উনি রিসিভ করেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেটি ভাইরাল হয়েছে, সেই ফোন নম্বরটিও আমার নয়, কণ্ঠও আমার নয়। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। তিনি আমাকে সংবাদ সম্মেলন করতে বলেছেন। তার বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম রয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা একই স্থানে এত বছর কীভাবে থাকে। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে বলে থাকেন যে, কিসের সংসদ সদস্য আমি। তার নাকি অনেক ক্ষমতা রয়েছে।