শাহাদাত হোসেন সোহেল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে ইসলামপুরে ১৯৯৬ সালের ৯ ই এপ্রিল প্রতিষ্ঠা করা হয় আলহাজ্ব কাজী মোঃ শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ। যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অত্র এলাকার শিক্ষার আলোকে সবার মাঝে দ্যুতির ন্যায় ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহান কারিগর আলহ্বাজ কাজী মোঃ শফিকুল ইসলাম। কলেজ এরিয়ায় স্হাপিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাস্তার পাশে ঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সম্মুখ ভাগে ১৯৯৯ সালে ভিত্তি প্রস্তর স্হাপন করে প্রতিষ্ঠা করা হয় অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন ও নান্দনিক মসজিদ ক্বাজী মোঃ শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মসজিদ। আর এই নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদেই আজ দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে পবিত্র মাহে রমযান মাস এলেই কোরআনের খাদেম হিসেবে “খতমে তারাবী” নামাজ পড়িয়ে আসছেন কাজী মোঃ শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ৫৮ বছর বয়সী হাফেজ মোঃ শফিকুর রহমান। যিনি একাধারে এই স্বনামধন্য ও নামকরা অত্র বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ এবং পবিত্র কোরআনের একজন সুদক্ষ হাফেজ। যা আমাদের দেশের ইতিহাসে বলা যায় একেবারেই বিরল। হাফেজ মোঃ শফিকুর রহমানের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর গ্রামে। বাবার নাম মৌলভী মোঃ আব্দুল জব্বার। বাবা মায়ের ১০ সন্তানের মধ্যে অধ্যক্ষ হাফেজ মোঃ শফিকুর রহমান তাদের চতুর্থ সন্তান । ব্যাক্তি জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। ছোট বেলায় তিনি তৃতীয় শ্রেনীতে পড়া অবস্হায়ই মাত্র ১২ বছর বয়সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ” জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা” থেকে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হন। তার উস্তাদ ছিলেন মরহুম হাফেজ আইয়ুব আলী।
কোরআনের হাফেজ হওয়া পর বাংলা জেনারেল লাইনের লেখাপড়াও তিনি দক্ষতার সাথে একই সাথে চালিয়ে যেতে থাকেন। এক সময় তিনি সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ এ অনার্স মাষ্টার্স সম্পূর্ন করেন।ঢাকায় শিক্ষা জীবন চালিয়ে যাওয়া অবস্থায়ও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ২ বছর এবং মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় মসজিদে ১৩ বছর একজন হাফেজে কোরআন তথা কোরআনের হাফেজ হিসেবে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে খতমে তারাবী নামাজ পড়ানোর সুযোগ লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর পূর্বে এসে একজন প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন আজকের এই স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলহাজ কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। প্রথমে একজন প্রভাষক হিসেবে যোগদান করলেও অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততার প্রতিদান দিতে সকলের ভালোবাসায় মাত্র দেড় বছর পরেই প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন এবং সেই থেকে আজ অবধি প্রতিষ্ঠানের সকল পর্যায়ের শিক্ষক মন্ডলীদের সাথে নিয়ে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানের ভালো রেজাল্টের ক্ষেত্রে সফলতার আলো যেমন বিলিয়ে যাচ্ছেন, পাশাপাশি একজন কোরআনের হাফেজ হিসেবে কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ মসজিদে ৫৮ বছর বয়সেও দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর যাবৎ প্রতি বছর পবিত্র রমযানে খতমে তারাবীর নামাজে ইমামতি করেও রাখছেন অন্যরকম এক অনুভূতি ও ভালোলাগার সাক্ষর। এত বড় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের মতো গুরু দায়িত্বভার পালন করার পাশাপাশি একাধারে একজন কোরআনের হাফেজ হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে ৫৮ বছর বয়সেও পবিত্র মাহে রমযানে খতমে তারাবী নামাজ পড়ানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন করলে সবার দোয়া চেয়ে তিনি বলেন,আমি আমার বাবা মা ও উস্তাদের দোয়ার বরকতে এখনও তারাবী নামাজ পড়িয়ে যাচ্ছি। যতদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন আমি যেন পবিত্র কোরআনের আলোয় জীবনকে রাঙাতে পারি সেজন্য সকলের দোয়া চাই। তিনি আরো বলেন, আমি আমার এই ৫৮ বছর বয়সে আপনাদের দোয়ায় এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৪৩ বছর ধরে পবিত্র মাহে রমযানে খতমে তারাবীর নামাজ পড়িয়ে যাচ্ছি। আমি যেন আমার জীবদ্দশায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোরআনের একজন খাদেম হিসেবে তার সঠিক খেদমত করে যেতে পারি সেজন্য সকলের দোয়া চাই । হাফেজ অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুর রহমানের সাথে খতমে তারাবী নামাজে একই সাথে ইমামতি করা তারাবী নামাজের ইমাম ও আলহাজ আমেনা বেগম দারুল কোরআন টাইটেল মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক হাফেজ মোঃ বেলাল বলেন,আমি অধ্যক্ষ স্যারের সাথে ৩ বছর যাবৎ নামাজ পড়াচ্ছি আমি এমন একজন সম্মানী ব্যাক্তির সাথে নামাজ পড়াতে পেরে অনেক খুশি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।