ওই ঘটনায় রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী ও তার অনুসারীরা আখাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক। তিনি সদর উপজেলার চাপুইর গ্রামের মাওলানা আব্দুর রশিদ ভূঁইয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার রাতে বিজয়নগরের দৌলতবাড়ি এলাকায় মাহফিলে অংশ নেন মাওলানা শরিফুল। মাহফিলে শিয়াদের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন তিনি। মাহফিল শেষে মধ্যরাতে পরিচিতজনের মোটরসাইকেল বাড়ি ফেরার পথে আখাউড়া উপজেলার আজমপুর রেলস্টেশন এলাকায় আসলে অজ্ঞাত কয়েক যুবক তার মোটরসাইকেলটির গতিরোধ করে হামলা চালায়।
এ সময় শরিফুলের জিহ্বা ও ঠোঁটের অনেকটা অংশ কেটে যায়। তা ছাড়া লাঠিসোটা দিয়ে তাকে মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। এ সময় মোটরসাইকেলে মাওলানা শরিফুলের সঙ্গে থাকা ওবায়দুল্লাহ (৩৪) নামে একজন আহত হয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক (আরবি) মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, দৌলতবাড়ি মাহফিলে শিয়াদের নিয়ে মাওলানা শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া বক্তব্য দিয়েছিলেন। মাহফিলে শেষে এক ভাগিনার সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে একদল যুবক তার ওপর হামলা করে। এ সময় তিনি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার শ্রীপুর ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জোহরের নামাজের আগে মানববন্ধন করেছেন।
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন দুলাল বলেন, শিয়া অনুসারীদের নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কারণে পূর্বপরিকল্পনা করে এমন হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
আখাউড়া থানার ওসি আসাদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী হুজুরসহ তার অনুসারীরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অভিহিত করা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ওই বক্তাকে একদল যুবক চড়-থাপ্পড় মেরেছে। এ সময় তার জিহ্বা কেটে গেছে। কী কারণে মেরেছে, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।