সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। এটি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
সোমবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায়ের পর্যবেক্ষণে এ মন্তব্য করেন।
এর আগে দুপুর সোয়া ২টার দিকে রায় পড়া শুরু করেন আদালত। আদালতের কার্যক্রম শুরুর আগেই আলোচিত এই হত্যা মামলার ১৫ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে তোলা হয়।
এদিকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপের ফাঁসিসহ সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আদালত প্রাঙ্গণে অব্স্থান নেন নির্যাতিত শত শত পরিবারের সদস্যরা।
তারা ‘খুনি প্রদীপের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’, ‘মেজর সিনহার খুনি প্রদীপের ফাঁসি চাই’, ‘২০০ মানুষ হত্যাকারীর প্রদীপের ফাঁসি চাই ‘ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিনহা হত্যা মামলার রায়কে ঘিরে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকে পুলিশের সর্বোচ্চ সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। আদালতে নিরাপত্তার স্বার্থে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
মামলার বাদী নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের কামনা- প্রধান দুই আসামি প্রদীপ ও লিয়াকতের সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে। বাকি আসামিদের সাজা হোক যার যার অপরাধের ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে একই সঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডও বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৃষ্টির ৩৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এত দ্রুত কোনো হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। এ মামলায় ৮৩ সাক্ষীর মাঝে ৬৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এর আগে হত্যা কিংবা ফৌজদারি কোনো মামলায় এত বিপুলসংখ্যক সাক্ষী নেওয়ার নজির নেই। তেমন নজির নেই এত স্বল্পসময়ে চার্জগঠন, শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনেরও। মাত্র ৩৩ কার্যদিবসে আমরা এ মামলার সব বিচারিক কার্যক্রম শেষ করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা সিনহা হত্যার বিষয়টি প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আমাদের আশা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও অভিযুক্তরা। স্বল্পসময়ে সিনহা হত্যার রায় দেশে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।