ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডেস্ক : ‘গ্রন্থাগারে বই পড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে উদ্যাপিত হয়েছে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস-২০২৪। এ উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এর যৌথ আয়োজনে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হলরুমে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম লিমন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন পিপিএম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, কবি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক জয়দুল হোসেন, বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদ জেলা কমিটির সভাপতি, কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন।
বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ-এর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সরাইল বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি শেখ এখলাছুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন টোটোগ্রাম সাহিত্যের রচয়িতা, কেষ্ট কবি খ্যাত ইকবাল সর্দার মোহাম্মদ নাজমুল কবির (ইসমোনাক), উদীচী জেলা শাখার সহ-সভাপতি মোঃ ফারুক আহমেদ ভুইয়া, এএমটিভি নিউজ বাংলার বার্তা সম্পাদক, কবি রুদ্র মোঃ ইদ্রিস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসা অথবা সন্ধ্যা নামার আগেই বাসায় ফিরে পড়তে বসা এই অভ্যাসটি এখনকার ছেলে মেয়েদের মধ্যে নেই বললেই চলে। এখনকার ছেলে মেয়েরা পড়াশোনার জায়গা থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারা বাহিরে ঘুরে বেড়াতে বা মোবাইল দেখা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। এই পড়াশুনার বিচ্ছিন্ন হওয়ার জায়গা থেকে ছেলেমেয়েদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে ঘরমুখী করতে হবে, স্কুলমুখী করতে হবে, বইমুখী করতে হবে। তাদেরকে জ্ঞানমুখী করতে হবে। এজন্য অভিভাবকদের বেশি সচেতন হতে হবে।
বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, স্মার্ট হওয়া মানে শুধু স্মার্ট ডিভাইস পরিচালনা করা, সুন্দর পোশাক পরিচ্ছেদ পরা বা চলনে-বলনে স্মার্ট হওয়াকে বুঝায় না। স্মার্ট হওয়া মানে বুঝায় বই পড়া। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়ার মাধ্যমে প্রকৃত স্মার্ট মানুষ হওয়া যায়। তিনি আরো বলেন- জ্ঞান এমন এক জিনিস যা বিতরণ করলেও এটি শেষ হয়ে যায় না। তিনি তরুণদের আহ্বান জানিয়ে বলেন- এসো আমরা সবাই মিলে বই পড়বো, নিজে আলোকিত মানুষ হবো, সমাজকে আলোকিত সমাজ হিসেবে গড়ে তুলবো।
সভায় কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন বলেন- পড়িলে বই আলোকিত হই। না পড়িলে বই অন্ধকারে রই। তিনি বলেন- যারা বই পড়েন তারা আলোকিত মানুষ হন। তাদের চেহারায়, চলনে বলনে জ্ঞানের আলো দীপ্তিমান হয়। যা সে নিজে না বুঝতে পারলেও তার আশেপাশের মানুষজন তা বুঝতে পারেন। যে এই ব্যক্তি একজন জ্ঞানী মানুষ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন- সমাজে জ্ঞানের আলোর খুব প্রয়োজন। সমাজে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেই সরকারের এত স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেই এত লেখক, কবি, সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। তিনি বলেন- তরুণ প্রজন্ম আলোকিত হলেই আমাদের বাংলাদেশ আলোকিত হবে, স্মার্ট হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে বই ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে লেখক-সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন গ্রন্থাগার প্রতিনিধি, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)