জনতার খবর ডেস্ক : ‘গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৪৮ বাচ্চা নিখোঁজ’, ‘গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৩৫ বাচ্চা নিখোঁজ’, কিংবা ‘একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি’- ফেইসবুকে এমন অসংখ্য পোস্ট ঘুরছে। ‘ভ্যারাইটিজ নিউজ’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে রোববার পোস্ট দিয়ে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে একটি শিশু হারানোর কথা বলা হয়েছে। শিশুটির ছবি দিয়ে ওই পোস্টে বলা হয়েছে, “ছেলেটি’র মা প্রায় পাগল হয়ে গেছে ছেলে কে খুঁজে না পেয়ে আজ দুই দিন ধরে!! ছেলেটি আমার খালাতো ভাই হয়।
এই হারানো বিজ্ঞপ্তিটি হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে পোস্টে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। শিশুটির খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে আসিফ ইকবাল প্রিন্স নামে একজন ফোন ধরে বলেন, শিশুটি গত শুক্রবারই বাসায় ফিরে এসেছে। অথচ তার দুদিন পরও নিখোঁজের বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হচ্ছে ফেইসবুকে।
শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে পিয়ারপুর নামের একটি পেইজ থেকে একটি শিশু হারানোর পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, “৬ জুলাই সকাল ৭টা থেকে শিশুটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।” ওই পোস্টেও বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করে ছেলেটির সন্ধান পেতে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া মোবাইল নম্বরে সকাল সন্ধ্যা যোগাযোগ করে জানা যায়, শিশুটি শনিবার সকালেই বাড়িতে ফিরে এসেছে।
ফেইসবুকে শিশু নিখোঁজের শত শত বিজ্ঞপ্তি দেখে অনিক মৃধার মতো অনেক অভিভাবকই আতঙ্কিত সময় পার করছেন। অনেকে সন্তানকে স্কুলেও পাঠাননি। ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলার বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, “আমার বাড়ি নওগাঁয়। সেখানকার একটি স্কুলের শিক্ষক আমার বড় বোন। তিনি ফেইসবুকে শিশু হারানোর পোস্ট দেখে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। নিজের সন্তানকে ঘরের বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় আমাকেও ফোন করে সাবধান করলেন আমি যে আমার ছেলের খোঁজ রাখি।
তবে শিশু হারানোর বিষয়গুলোকে ‘গুজব’ বলছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) খ মহিদ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়গুলো অ্যানালাইসিসি করে দেখেছি যে এটা ‘অ্যাবসুলেটলি গুজব’। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা নগরবাসীকে আশ্বস্ত করছি যে এই বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিছু শিশুর হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মহিদ উদ্দিন বলেন, “গত তিন দিনে আমার ডিএমপির আওতাধীন থানাগুলোতে ৩২টি নিখোঁজ ডায়েরি পেয়েছি, যা অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের মতোই। এই ধরনের ঘটনায় ৭ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশের খোঁজ পাওয়া যায়। এসব ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশিরভাগ শিশু রাগ করে বাড়ি ছাড়ে, কিছু শিশু থাকে অপ্রকৃতিস্থ, যারা বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরতে পারে না।
কোনও শিশুর খোঁজ না পেলে পুলিশে জানানোর অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ উদ্দিন বলেন, “নিশ্চিত না হয়ে কোনও তথ্য ফেইসবুকে শেয়ার করা ঠিক নয়।