পীরগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রংপুর বিভাগের প্রশাসনের কর্মকর্তা এখন পীরগঞ্জে অবস্থান করছেন। তারা হিন্দু-মুসলিমদের মাঝে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি রক্ষায় এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন।
সোমবার সকালেই রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভুইয়া, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর কসবা হিন্দু জেলে পল্লীতে ওই মতবিনিময় সভা করেন।
মতবিনিময় সভা শেষে বড় করিমপুর কসবা মাঝিপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার পরিবারগুলোর মাঝে সরকারি সহায়তা চাল, শাড়ি, লুঙ্গি এবং কম্বল দেয়া হয়েছে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিরোদা রানী রায়, অফিসার ইনচার্জ সরেস চন্দ্র, রামনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম বিএসসি উপস্থিত ছিলেন।
গত রোববার রাতে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর কসবা হিন্দু পল্লী মাঝিপাড়ার এক কিশের ফেসবুকে একটি ধর্মীয় উসকানিমুলক পোস্ট দেয়। এতে কিছু অপরিচিত মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে তার গ্রামের বাড়ী ঘেরাও করে। তার আগেই ওই কিশোর সপরিবারে পালিয়ে যায়।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সুমিতা রানী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হামার সগি (সব) নিয়া গেইছে। বাড়ীত কিচ্ছু থুয়া যায় নাই। চাউল, টাকা, সোনা নিয়া গেছে। হামরা এখন কি করি খামো বাবা!
রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান বলেন, স্থানীয় এক কিশোরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগের পর রোববার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তার বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেও দূরে বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তবে এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আমি এলাকায় থাকবো। ইতিমধ্যে ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভুইয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করছি। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদেরকে সরকারী সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং আরও দেয়া হবে।