স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে পিতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সারাদেশ, 30 October 2022, 122 বার পড়া হয়েছে,

বাবার সম্পত্তি ভাগ করে লিখে দিতে চাপ দেন সন্তানরা। এতে রাজি না হওয়ায় জন্মদাতা বাবাকেই পিটিয়ে আহত করে তারা। বিষয়টি গোপন রাখতে আহত বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন হামলাকারী সন্তানরাই।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে শনিবার ভোরে জীবন প্রদীপ নিভে যায় হতভাগা বাবার। পরে হাসপাতাল থেকে গাড়িতে করে বাবার লাশ বাড়িতে এনে গোপনে দাফনের প্রস্তুতি নেয় সন্তানরা। তবে সব গোপনীয়তায়ও শেষ রক্ষা হয়নি সন্তানদের। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে হাজির হয়। তারা বাবার লাশসহ সন্তানদের আটক করে নিয়ে যান থানায়।

ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের দক্ষিণ আটঘর গ্রামে ঘটে। সন্তানদের হাতে নিহত বাবার নাম মো. খালেক সরদার (৫৫)। তিনি দক্ষিণ আটঘর গ্রামের মৃত মজিদ সরদারের ছেলে। স্ত্রীসহ তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।

নিহত খালেকের ভাই মালেক সরদার ও ভাতিজা মোজাম সরদার বলেন, খালেক স্ত্রী-সন্তাদের নিয়ে আমাদের একই দক্ষিণ আটঘর গ্রামে আলাদা বাড়ি করে থাকেন। গত ১৪ অক্টোবর ভোরে খালেকের স্ত্রী-সন্তানরা এসে আমাদের বলে খালেক আঘাত পেয়ে স্টোক করেছে; তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। পরে তারাই তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এরই মধ্যে জানতে পারি, জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে ১৩ অক্টোবর রাতে খালেকের ছেলে সাব্বির সরদার, মেয়ে রুমা বেগম, সাবিনা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল হোসেন তাকে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে ঘরে শুয়িয়ে রেখেছিল। পরদিন সকালে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমাদের এসে খবর দিয়ে তারা খালেককে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মালেক ও মোজাম আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখি তার অবস্থা চরম খারাপ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও কোপের দাগ। মারা যাওয়ার পর শনিবার সকালে তার লাশ বাড়িতে এনে গোপনে দাফন করতে নেওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছিল ওরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে খালেকের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ সময় খালেকের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম, ছেলে সাব্বির সরদার, মেয়ে রুমা বেগম ও সাবিনা বেগমকে আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে জামাই রেজাউল হোসেন পালিয়ে যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানরা গত ১৪ অক্টোবর খালেক সরদারকে বেধরম মারপিট করে গোপনে একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ২৫ অক্টোবর তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

শনিবার হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর লাশ ছেলেমেয়েরা অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি নিয়ে আসলে খালেকের ভাইয়েরা আমাদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছি। সেই সাথে নিহতের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে থানায় নিয়ে আসি। এ বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।