ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে স্বামীর পরকীয়ার জেরে ননদ ও ভাবির আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার (১৪ আগস্ট) ও মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) উপজেলার নাসিরপুর ও দাতমণ্ডল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যাকারীরা হলেন- জরিনা বেগম (২৮) ও বিপাশা বেগম (৩০)। নিহত জরিনা বেগম ও বিপাশা সম্পর্কে ননদ ও ভাবি। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলা সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের আক্তার মিয়ার স্ত্রী জরিনা বেগম। তিনি একই ইউনিয়নের দাতমণ্ডল গ্রামের মঞ্জু মিয়ার মেয়ে। অপরদিকে নিহত বিপাশা বেগম কিশোরগঞ্জর জেলার অষ্টগাম উপজেলার বাসিন্দা ও নিহত জরিনার ভাই মতিন মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত জরিনার স্বামী আক্তার মিয়া জরিনার ভাবি বিপাশার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া করে আসছিল। স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পেরে জরিনা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে স্বামী আক্তার মিয়া নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে গত রোববার বিকাল ৪টার দিকে মারা যান জরিনা।
এদিকে জরিনার মৃত্যুর রেশ না কাটতেই নিহত জরিনার ভাবি বিপাশা বেগম মঙ্গলবার ১৬ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকেও পরিবারের লোকজন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। জেলা সদরে যাওয়ার পথে দুপুর ২টার দিকে তারও মৃত্যু হয়। একদিনের ব্যবধানে দুই গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জরিনার স্বামী আক্তারের সঙ্গে কথা হলে তিনি পরকীয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয়রা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার স্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।
আপনার স্ত্রীর ভাবি বিপাশার সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরকীয়ার ফলে জরিনা আত্মহত্যা করেছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, এসব মানুষের অপপ্রচার।
বিপাশার স্বামী মতিন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার বাবা মঞ্জু মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে জরিনা কি কারণে মারা গেছে সেটা এখন বলা যাবে না। তবে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপস মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
আপনার ছেলের বউ বিপাশা কেন বিষপানে আত্মহত্যা করেছে- জানতে চাইলে বলেন, এখন আমার মাথা গরম। পরে কথা বলেন- বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, ১৪ আগস্ট জরিনা বেগম নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। পরে লাশ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে ১৬ আগস্ট নিহত জরিনার ভাবি বিপাশা বেগমও বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পরিবারই লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।