উল্লেখ্য, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ অঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনায় জন্য সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চেড়িয়ারা গ্রামের করের বাড়িতে(মজুমদার বাড়ি)একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্পের নাম দেয়া হয় মজিব নগর ক্যাম্প। প্রথমে এই ক্যাম্পটি শোরসাক বাজারে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জয়নাল আবেদীন মজুমদার এর ‘মজুদার ফার্মেসীতে’ কাজ শুরু করে।
সময়ের ব্যবধানে দেশমাতৃকা শত্রুমুক্ত করতে দলে দলে মুক্তি বাহিনীতে মুক্তিকামী মানুষ যোগদান করায় একটা সময় দোকানে আর স্থান সংকুলান না হওয়ায় চেড়িয়ারা করের বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধাদের ঐ ক্যাম্প স্থানান্তর করা হয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, মজুদার ফার্মেসীর মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডাঃ জয়নাল আবেদীন মজুমদার ছিলেন, এই ইউনিয়ন তথা ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণপাড়ের সংগ্রাম কমিটির সভাপতি এবং সালেহ আহম্মেদ বিএসসি ছিলেন সেক্রেটারী। সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এবং যুদ্ধের ভয়াবহতা বীভৎস রুপ লাভ করার প্রাক্কালে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএম কলিম উল্লাহর নেতৃত্বে বহু মুক্তিযোদ্ধা, তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমার বিএলএফ এর সভাপতি জহিরুল হক পাঠান এই ক্যাম্পে যোগদেন। এই ক্যাম্পে আরো আসেন বর্তমান চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল এর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম করিম পাটওয়ারী, বেসরকারি সংস্থা গণ স্বাস্থ্যের ট্রাষ্টী বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফর উল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এহতেশাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, কাজির কাপ মুন্সি বাড়ির বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন মজুদার, জাকারিয়া সহ বহু মুক্তিযোদ্ধার পদচারণায় প্রকম্পিত ছিলো এই ক্যাম্পে।
উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৫১ বছরপর চেড়িয়ারা করের বাড়ির(মজুমদার বাড়ি) এই ক্যাম্প সম্পর্কে জানার জন্য পরিদর্শনে আসায় শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, শাহরাস্তি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাংবাদিক সহ উপস্থিত সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হুদা মজুমদার ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মোঃ রেদোয়ান হোসেন মজুমদার সেন্টু। তাঁরা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে করের বাড়িতে(মজুমদার বাড়ি)মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থাকায় আমাদের বাড়ির ৫টি বসত ঘর সহ শোরসাক বাজারে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডাঃ জয়নাল আবেদীন মজুমদারের শোরসাক বাজারে থাকা ‘মজুমদার ফার্মেসী’টি পুড়ে দেয়া হয় এর ফলে আমরা আর্থিভাবে অনেক ক্ষতির সন্মুখিন হন।
বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন আমরা তাই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটির স্বীকৃতি চাই। আমরা রাষ্ট্রীয় কোন সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাশা করি না।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির হোসেন মিয়াজী,মাহমুদুল হাসান আজাদ, দেলোয়ার হোসেন, শাহ মিরন মেম্বার,মোঃ আনোয়ার হোসেন, বাবুল,লিয়াকত হোসেন, সবুজ সহ ছাত্রলীগ নেতা ইস্কান্দার মির্জা(সুমন),ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেন প্রমুখ।