মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে নিলামে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা যুবলীগের এক নেতার নেতৃত্বে সমঝোতার ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় পূর্ব পাইকপাড়াস্থ জেলা কার্যালয়ে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ৯৪ জন পে অর্ডার জমা দিলেও মাত্র ৭ জন
নিলামে অংশ নিয়েছে। ফলে ৩লক্ষ ৩৯ হাজার ১৬০ টাকার প্রাক্কলিত মূল্যের নিলামটি যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান ইসলাম এন্টারপ্রাইজ মাত্র ৩ লক্ষ ৭১
হাজার টাকায় বাগিয়ে নেন। প্রতিযোগীতা করতে না দেওয়ায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জানা গেছে, পুরাতন ও জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় জেলা কার্যালয়ের মূল ভবনের অর্ধেক অংশ ও আরো দুটি একতলা ভবন এবং নাসিরনগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ভবনটি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেয় সংস্থাটি। এর প্রেক্ষিতে ঢাকা, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নিলামে অংশ নিতে আসে নিলামকারীরা। কিন্ত তারা চাপের মুখে সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অংশগ্রহণকারী জানান, আপাতত সরকারি মূল্যের থেকে নামমাত্র বেশি মূল্যে নিলামটি নেয়া হবে। পরে ৯৪ জন আলাদা বসে পুনরায় দাম নির্ধারন করে অতিরিক্ত অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা হবে। এই রকম শর্ত দিয়ে মোবাইল ও টোকেন নম্বর রেখে তাদের জোরপূর্বক কার্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।এদিকে অনিয়মের খবর পেয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গেলে নিলাম পরিচালনা কারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি মোঃ নাসিরউদ্দিন, সহকারী প্রকৌশলী রূপক সরকারসহ অন্যান্যদের দুতলার একটি কক্ষে পাওয়া যায়। এসময় ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি মোঃ নাসিরউদ্দিনের কাছে নিলামের প্রাক্কলিত মূল্য কত জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান। পরে একটি সাদা কাগজে লেখা মূল্য এনে সাংবাদিকদের দেখান। মূল্য না জেনে
কিভাবে নিলাম পরিচালনা করলেন? এমন প্রশ্নের তিনি মনগড়া উত্তর দেন।তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কুমিল্লা সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকেীশলী আলী আজগরও গা বাঁচানো উত্তর দিয়েছেন। কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে তিনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারবেন না উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। প্রাক্কলিত মূল্য কত সেটিই নিলামকারী জানে না, তাহলে নিলাম কতটুকু সুষ্ঠু হল? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নিলামের ক্ষেত্রে প্রাক্কলিত মূল্যের প্রয়োজন নেই।যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জহিরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে তিনি জানান, তার
লাইসেন্স নিয়ে অন্য কেউ অংশ নিয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, সমঝোতা বা নিকোতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ ও রাকিব নামের দুজন জড়িত। এ বিষয়ে সচেতন মহল অভিযোগ করে বলেন, একটি সিন্ডকেট দীর্ঘদিন যাবৎ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ের টেন্ডারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।
তাদের ভয়ে সাধারন ঠিকাদাররা মুখ খোলার সাহস পায়না। বছরের পর বছর ধরে এ অফিসে এ ধরনের অনিয়ম চলে আসছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।