এ প্রসঙ্গে মণি রানী নাগের বাবা বলেন, বিয়ের পর থেকে স্বামীর পরিবারের লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিল মেয়েটি। বিয়ের পর থেকে মেয়েটিকে শান্তি দেয়নি তারা। আমার মেয়ের মৃত্যুই চেয়েছিল। শেষ রক্ষা হয়নি। রোববার মণিরাণী জীবন দিয়েই ১৭ বছর ধরে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ করলো।
তিনি আরো বলেন, আমি এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার চাই।
কিন্তু অজিদ নাগের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বামীর পরিবারের লোকজন।
এদিকে মায়ের মৃত্যুতে চিরদিনের জন্য এতিম হয়ে গেল মণিরাণীর অবুঝ দুই কন্যাশিশু অতশি (১০) ও মতুরা (০৭)।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, গত ১৭-১৮ বছর আগে সামাজিকভাবেই অরূয়াইলের শাহপাড়ার জিতু ধরের ছেলে অনিক রায়ের সাথে বিয়ে হয় মণি রাণীর। অনিক অরূয়াইল বাজারের ষ্টুডিও ব্যবসায়ী।
বিয়ের দেড়-দুই বছর পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি হয় মণি রাণীর। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কালিশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। ইতোমধ্যে অতশি ও মতুরা নামের দুই কন্যা সন্তানের মা হন মণি।
স্বামীর পরিবারের সাথে বাকবিতণ্ডা, হাতাহাতিকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে। মেয়ের সংসার ঠিকিয়ে রাখতে সালিসের মাধ্যমে একাধিকবার বিরোধ নিস্পত্তি করেছেন অজিদ নাগ। এরপরও স্বামীর সংসারে সুখ পাচ্ছিলেন না মণি রাণী। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোববার দুপুরে বিষ পান করেন মণি।
অবস্থা বেগতিক দেখে মণি রাণীকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বামী অনিক। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন মণি রাণী।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: নোমান মিয়া বলেন, আনুমানিক বিকেল আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে বিষ পান করা অবস্থায় মণিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বামী। ওয়াশ শুরু করার সময়ই বিকালে মারা যান মণি রাণী।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে মণি রানীর বাবা স্বামীসহ স্বামীর পরিবারের লোকজনের নামে একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেছেন। স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করব।