গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একাধিকবার ফেসবুক লাইভে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন এক তরুণী। ফেসবুক লাইভটি ভাইরাল হওয়ার পর অবশেষে গত শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী তরুণী ওই নেতাসহ তিনজনের নামে মামলা রজু করেছেন কালিয়াকৈর থানায়।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলার মৌচাক এলাকার মোবারক হোসেনের ছেলে এস এম জুবায়ের হিমেল (৩০)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী।
অপর দুই আসামি হলেন একই এলাকার মো. শাকিল (২৫) ও সবুজ হোসেন (২৮)।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় এক তরুণী (২২) থানায় ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওইদিন পুলিশ অভিযোগটি আমলে না নেওয়ায় তরুণী তার ফেসবুক আইডিতে ছাত্রলীগ নেতার বিচার দাবি করে একটি সরাসরি বার্তা দেন। সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতা ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হিমেলের পরিবারের সঙ্গে একাধিক বার পুলিশের বৈঠক হয়।
এছাড়াও ওই নেতার হুমকিতে পরের দিন বৃহস্পতিবার ওই তরুণী আবারও ফেসবুক লাইভে এসে বিচার ও সহযোগীতা চান। ঘটনাটি ফেসবুক লাইভে ভাইরাল হলে অবশেষে গত শুক্রবার রাতে ওই নেতা এস এম জুবায়ের হিমেল, শাকিল ও সবুজ হোসেনের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা রজু করেন তরুণী। শনিবার সকালে পুলিশ ওই তরুণীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পাঠায়।
নতুন করে দেওয়া এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়েছে, তিন বছর আগে হিমেলের সাথে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
সেই সম্পর্কের জের ধরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে হিমেল। একই সঙ্গে তরুণীর কাছ থেকে কৌশলে প্রতারণা করে প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি আই ফোন নিয়ে যায়। ওই তরুণী মামলায় আরো উল্লেখ্য করেন, গত ৪ জানুয়ারী হিমেলের সহযোগী শাকিল ও সবুজের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করার কথা বলে বাসা থেকে ডেকে তার বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ছাত্রলীগ নেতা হিমেলকে তরুণী বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।
ওই তরুণী বলেন, আমি এখনও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
আসামি পক্ষের লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।