ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৩ বছর বয়সে এক শিশুর কোলে আরেক শিশুর জন্ম নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগের তীর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের সিংহগ্রামের হরিদাস ভৌমিকের দিকে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয়দের নিয়ে একটি বিচার-সালিশ করেন। সেখানে অভিযুক্ত হরিদাস ভৌমিকের সঙ্গে চার বছর পর বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। তবে চার বছর পর মেয়েকে নিয়ে সে ঘর সংসার করবে কিনা সে শঙ্কাও প্রকাশ করেন শিশুটির মা।
অভিযুক্ত হরিদাস ভৌমিক নরেশ মল্লিকের ছেলে।
মেয়েটির মা যুগান্তরকে জানান, আমার স্বামী বাড়িতে থাকেন না। আমিও মানুষের বাড়িতে কাম-কাজ করি। নিজের ঘরবাড়ি না থাকায় হরিদাস ভৌমিকের বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকতাম। কিন্তু আমি বাড়িতে না থাকার সুযোগে হরিদাস আমার মেয়েকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। সেই ধর্ষণের ফল আজ আমার শিশু মেয়ের কোলে আরেক শিশুসন্তান জন্ম নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রামের লোকজন মিলে সালিশ করে আমার মেয়েকে হরিদাস স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেটি চার বছর পর। এত বছর পর মেয়েকে নিয়ে সে ঘর সংসার করবে কিনা সে শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার রাতে গ্রামের শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বিচার-সালিশের আয়োজন করে এলাকাবাসী। সালিশে একটি জুড়িবোর্ড করে ৩০০ টাকার একটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কিছু শর্ত দিয়ে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত হয়।
চুক্তিতে উল্লেখ থাকছে, মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে উভয়ের বিয়ে হবে। পাশাপাশি মেয়েটিকে ৩০ শতক জমি দেওয়া হবে মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য।
সালিশকারক রামপ্রসাদ মল্লিক বলেন, যেহেতু মেয়েটির বয়স ১৮ হয়নি, তাই আইনগতভাবে বিয়ে দেওয়া যাবে না। তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এলাকাবাসীর সম্মতিতে।
অভিযুক্ত হরিদাস ভৌমিকের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোন এ কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে তার ছোট ভাই গৌরদাস ভৌমিক মোবাইল ফোনে বলেন, আমার ভাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তাই আদালতের মাধ্যমে উভয়ের ডিএনও টেস্ট করে পরীক্ষার পর আমার ভাই দোষী হলে যে কোনো রায় আমরা মেনে নেব।
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানা ওসি মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, আমাদের কাছে কোনো পক্ষ আইনের সহায়তার জন্য আসেনি। তার পরও আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।