কসবার কোল্লা পাথর সমাধিস্থলে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আযম বীর প্রতীক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 1 December 2024, 27 বার পড়া হয়েছে,

শেখ কামাল উদ্দিন,বিশেষ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ঐতিহাসিক কোল্লাপাথর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সমাধিস্থল পরিদর্শন করেছেন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আযম বীর প্রতীক এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী। রোববার দুপুরে বিজয়ের মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে তাঁরা এই সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপদেষ্টা ফারুক ই আযম বীর প্রতীক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন, অথচ তালিকাভুক্ত হয়েছেন, তারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাদের শনাক্ত করা এবং তালিকা থেকে বাদ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এই কাজটি জাতিগতভাবে আমাদের সবার সমন্বয়ে করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে সরকার ইতোমধ্যে অনলাইনে ডাটাবেস তৈরি করেছে। তিনি বলেন, “সাধারণ জনগণের জন্য আপত্তি ফরমের সুযোগ রাখা হয়েছে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করছি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এলাকাবাসীর কাছে সবসময়ই পরিচিত। আমরা সেসব তথ্যও যাচাই করছি।

ফারুক ই আযম বীর প্রতীক বলেন, “এই সমাধিস্থল আমাদের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের চিরন্তর স্মারক। এখানে যারা শায়িত, তারা দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এক অভিন্ন স্বপ্নের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাসকে জানুক এবং এর মর্যাদা রক্ষা করুক।

ফারুক ই আযম আরও বলেন, “আমাদের দায়িত্ব শুধু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করাই নয়, বরং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। আমাদের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির অহংকার। তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কোল্লাপাথর এ সমাধিস্থলটি রক্ষণা-বেক্ষণ এবং স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী এসেছেন। একটি প্রকল্প তৈরী করে এর উন্নয়ন করা হবে।

পরিদর্শনকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ও সাধারণ জনগণ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, “কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থল মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়ের প্রতীক। সরকারের এই উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে।

আগামী নির্বাচনের কখন হবে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, জাতির মধ্যে একটি প্রচন্ড ঐক্যের আবহের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা সংস্কার থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাব। এটাই আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। তিনি বলেন, কাউকে বিচ্ছিন্ন রেখে না। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংস্কারের ব্যাপারে তিনি বলেন, যে কমিশনগুলি হয়েছে, তাদেরকে ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হতে পারে কারো কারোর জানুয়ারির দুই-এক সপ্তাহ লাগতে পারে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জনসম্মুখে যাবে। রাজনৈতিক দল, জনগণ চেক হোল্ডার তাদের সাথে বলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে সরকার।

উপদেষ্টা ও সচিব ঢাকা থেকে সড়ক পথে কসবার এ কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থলে আসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার, সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. গোলাম সারওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, কসবা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল কাদেরসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদ কর্মীগণ।