নিউজ ডেস্ক : নিখোঁজের ১৩ দিন পর অবশেষে শফিকুল ইসলামের (৪৬) সন্ধান মিলেছে। শফিকুল গত ২৯ সেপ্টেম্বর আনুমানিক দুপুরের দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরতলীর ভাদুঘর গ্রামের মহসিন মিয়ার বড় ছেলে।
শফিকুল ইসলামে ভাগিনা কামাল হোসেন তার সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সন্ধান দাতা শাহ্ মোঃ তৌহিদুর রহমান জানান, আমি শাহবাগ থেকে মোটরসাইকেল করে মালিবাগের দিকে যাওয়ার পথে কাকরাইলের ট্রাফিক জ্যামে পড়ি, ট্রাফিক জ্যাম ছিল বিচারপতি ভবন বরাবর ৩নং গেইট পর্যন্ত। হঠাৎ আমার চোখে পড়লো এক মানুষিক রোগীকে। এত ভালো করে খেয়াল করিনি। পথেঘাটে এমন মানুষিক রোগী তো কত’ই দেখা যায়। যখন আমি শান্তিনগর চলে আসি তখন আমি মনে মনে ভাবি এই লোক তো সেই লোক যাকে আমার বাবা Shah Shofiqur Rahman ফেইসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করে ছিলো তার ছবি। সাথে সাথে মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে আমি পুনরায় ওই অসুস্থ ব্যক্তির কাছে যাই। গিয়ে শেয়ারকৃত পোস্ট দেখে নিশ্চিত হই তিনি আমাদের ভাদুঘর নিজামত বাড়ির মহসিন মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম। তৎক্ষনাৎ আমি ফোনে কথা বলি বাবার সাথে। তিনি আমাকে বলেন যে তুই তাকে (শফিকুলকে) ফেলে রেখে যাবি না কোথাও। বাবা ফোনে যোগাযোগ করে আমার নাম্বার দেয় তার পরিবারের কাছে। তারপর আমার সাথে যোগাযোগ করে শফিকুল ইসলামের বাবা মহসিন মিয়া। তার আত্মীয় স্বজনরাও একের পর এক ফোন করতে থাকে। এরই মধ্যে আমাকে ফোন দেয় এয়ারপোর্টের একজন পুলিশ সদস্য নাম ইব্রাহিম। তিনি সম্পর্কে শফিকুলের ভাগ্নে। ইব্রাহিম ভাই তিনির বন্ধুকে পাঠায়। তারপর শফিকুল ইসলামের শ্যালক আসে। তারা ও শফিকুলের পরিবারের অন্য সদস্যরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। এবং আমি তাদের কাছে শফিকুল ইসলামকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাই।
পারিবারিক ও জিডি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে শফিকুল তার ছোট ভাই রুবেলের সঙ্গে ট্রেনে (চট্টলা) ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর রুবেল শফিকুলকে স্টেশনে বসতে বলে কাউন্টারে যান। এসে দেখেন শফিকুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভুলক্রমে অন্য ট্রেনে (তিতাস) উঠে পড়ে। এরপর থেকে আর শফিকুলের খোঁজ মিলছিলনা।
শফিকুলের বাবা মহসিন ভূঁইয়া বলেন, অসুস্থতার কারণে শফিকুল ভালোভাবে কথা বলতে পারে না। এছাড়া পায়ের আঙ্গুলে সমস্যা থাকায় ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে টঙ্গী, বিমানবন্দর, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এবং ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, লিফলেট দেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে, তবুও আমার ছেলের খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে তার সন্ধ্যান মিললো।