জুয়েল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত নগেন্দ্র বণিকের পিতা মৃত পিতাম্বর বণিক ও মাতা মৃত বিন্দুবাসিনী বণিক। আখাউড়া পৌরসভা থেকে প্রদানকৃত ওয়ারিশনামা সনদেও একই পরিচয় পাওয়া যায় মৃত নগেন্দ্র বণিকের। ওয়ারিশসূত্রে এবং আদালতের রায় ডিক্রির আলোকে নগেন্দ্র বণিক রাধানগর মৌজার সেঃমিঃ ১৬৬দাগের ১৮.১৮শতক ভূমির মালিক স্বত্ত্ববান।তার মধ্যে মৃত নগেন্দ্র বণিকের ওয়ারিশদের দখলে ৩.৬৭শতক ভূমি আছে। বাঁকি ১৪.৫১শতক ভূমি মৃত আবু ছায়েদের ছেলে ইকবাল হোসেন বেলাল গংদের দখলে রয়েছে। এনিয়ে দীর্ঘ ২১বছর মামলা চলে এবং আদালত উভয়পক্ষের মালিকানা সহ প্রাপ্য ভূমির পরিমাণ উল্লেখ করে রায় দেয়।
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে পাওয়া ১৯৬৭সনের এক দলিলসূত্রে জানা যায়, মৃত আবু ছায়েদ জনৈক ইউনুছ মিয়া থেকে ১৬৬দাগে ২৮২ নং খতিয়ানে ২৫শতক যায়গা কিনে।
কিন্তু বাস্তবে ১৬৬দাগে ২৮২ নং খতিয়ানে কোনো ভূমির অস্তিত্ব নাই। সেঃমিঃ ১৬৬দাগের প্রকৃত এসএ১০৫ এবং আরওআর ২৬০, ২৬১,২৬২ এবং২৬৩। এদিকে ২৮২ নং খতিয়ানের যায়গাটি মসজিদ পাড়ায় অবস্থিত আমানত খাঁর।
এবিষয়ে শিপন বনিক বলেন, মৃত আবু ছায়েদ এর ছেলে ইকবাল হোসেন বেলাল গংদের দাবিকৃত সাড়ে ২৮ শতাংশ জায়গার মধ্যে সাড়ে ১৪ শতাংশ জায়গা আমাদের। যা তারা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।আমার বাড়ির নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙ্গে আমার বসতঘরে প্রবেশের চেষ্টা করলে আমি তার প্রতিবাদ করি। বেলাল মিয়া গং কর্তৃক মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শিপনের যায়গা দখলের বিষয়ে ইকবাল হোসেন বেলালের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে প্রায় ২৮শতক পরিমাণের একটি বিএস খতিয়ান দেখিয়ে বলেন, দলিল মূলে বিএস খতিয়ান সূত্রে আমি যায়গার মালিক হয়ে খাজনা দিচ্ছি এবং ভোগদখলে আছি। শিপন যদি রায় পেয়ে থাকে উচ্ছেদের মামলা করবে। উচ্ছেদের মামলা করলে কোর্টে তার যায়গা বুঝিয়ে দিবে। এভাবে আমার উপর অত্যাচার করবে কেন।
কিন্তু জনৈক ইউনুস মিয়ার কাছ থেকে মৃত আবু ছায়েদ এর ক্রয়কৃত যায়গাটির দলিলপত্র এবং তার পূর্বে ওই ভূমির মালিক ইউনুস মিয়া কিভাবে হয়েছিল এবং কতটুকু ভূমির মালিক ইউনুস মিয়া ছিল তার কোনো ডকুমেন্টস যেমন সিএস, আরওআর, দলিল ইত্যাদি প্রতিবেদককে দেখাতে ব্যর্থ হন ইকবাল হোসেন বেলাল।
এই জায়গাটির সম্পর্কে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, শিপন বণিক কোর্টের মামলায় বিভিন্ন ধাপে কোর্ট থেকে রায় নিয়ে এসে তার স্বত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু যেহেতু ভূমিটা একটা বিতর্কিত ভূমি এবং তার দখলে ছিল না বিধায় তার স্বত্ত্ব যেভাবে পেয়েছে সেভাবে ভোগদখল পাওয়ার জন্য কোর্টে উচ্ছেদ মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
এর আগে সংঘর্ষের খবর পেয়ে গত ২মে ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষের লোকজনকে থানায় নেয়। পরে জায়গা নিয়ে চলমান বিরোধ স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক করে মীমাংসা করা ও সালিশের আগ পর্যন্ত আর কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত না হওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে উভয় পক্ষকে ছেড়ে দেন পুলিশ।