নিউজ ডেস্ক : রবিউল (১৮), বাবা খলিল মিয়া একজন রিকশাচালক। জীবিকার তাগিদে পরিবার নিয়ে চলে যান ঢাকা শহরে। রবিউলের বয়স তখন ৬-৭ বছর। একদিন সহপাঠীদের সঙ্গে খেলা করতে গিয়ে রবিউল মাথায় আঘাত পায়। সঙ্গে সঙ্গে কোনো সমস্যা না হলেও কয়েক বছর পর তার পিতা-মাতা দেখতে পান রবিউল অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। গত ১০ বছর ধরে তার পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
রবিউলের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে ঘরের থালা-বাসনও বিক্রি করেছে তার পরিবার। ভূমিহীন এই পরিবারকে সরকারের আশ্রয়ণে দেওয়া হয়েছে ঘর। কিন্তু সন্তানের এমন অবস্থায় পাগলপ্রায় পিতা-মাতা।
মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ভলাকূট ইউনিয়নের শিবিরপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, অসহায় ছেলেটির বাবা খলিল মিয়া ও তার পরিবার সরকারি একটি জায়গায় পরিত্যক্ত ছোট্ট টিনের ঘরে বসবাস করছে। ওই ঘরের এক কোণে শিকলবন্দি রবিউল।
কথা হয় মা পারভীন আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, সন্তানের চিকিৎসার জন্য আমার ঘরের থালা-বাসনও বিক্রি করেছি। এখন আর কিছুই নেই। আপনারা আমার ছেলেটাকে বাঁচান। গত ১০ বছর ধরে রবিউলকে আমরা শিকলে বেঁধে রেখেছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শামীম মিয়া বলেন, আমার মনে হয় ছেলেটির সুচিকিৎসার জন্য যদি সরকার বা সমাজের বিত্তবান কেউ এগিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়ায়, তাহলে সে হয়তো সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাকেশ পাল বলেন, আমি তার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে আমাদের সমাজসেবার কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা যায় কিনা তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি কিভাবে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো যায়। (যুগান্তর)